6/recent/ticker-posts

বাংলাদেশের পর্যটক না আসায় ধুঁকছে কলকাতার যেসব অঞ্চল

 বাংলাদেশের পর্যটক না আসায় ধুঁকছে কলকাতার যেসব অঞ্চল





মাস দুয়েক আগেও কলকাতার নিউ মার্কেট, মার্কুইজ স্ট্রিট গিজ গিজ করত বাংলাদেশের মানুষে। তবে জুলাই মাস থেকে সেদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন, ব্যাপক সহিংসতা, কারফিউ, শেষে শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পলায়ন – সব মিলিয়ে কলকাতায় এখন বাংলাদেশি পর্যটক প্রায় নেই বললেই চলে।

এর একটা বড় কারণ ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশে ভিসা দেওয়ার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ চালু করে নি। তাই আগে থেকে যারা ভিসা নিয়েছিলেন এবং জরুরি চিকিৎসা করাতে হলেই ভারতে আসার অনুমতি পাচ্ছেন বাংলাদেশিরা।


কলকাতার নিউ মার্কেট, মার্কুইস স্ট্রিট বা মুকুন্দপুর অঞ্চলের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেই মূলত বাংলাদেশি পর্যটকরা থাকেন, কেনাকাটা করেন। ওইসব এলাকায় বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে বছরভর।


“বাংলাদেশ থেকে প্রায় কেউই আসছেন না মাসখানেকের বেশি সময় হয়ে গেল,” বলছিলেন ঐতিহ্যবাহী নিউমার্কেটের ‘শপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোক গুপ্তা

হোটেল-খাবারের দোকান বা অন্যান্য পরিষেবা – এই রাস্তার সব কিছুই বাংলাদেশি পর্যটক-কেন্দ্রিক।


করোনার সময়ে যেমন বাংলাদেশি পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, গত একমাসে বাংলাদেশে অশান্তির জেরে আবারও প্রায় সেই অবস্থাতেই পৌছিয়েছে।


আবার বহু মানুষ বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা করাতে আসেন কলকাতায়।


একটি বেসরকারি হাসপাতাল গোষ্ঠী জানাচ্ছে এক মাস আগের তুলনায় এখন বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে।এছাড়াও ওই অঞ্চলে মানিএক্সচেঞ্জ, বাসের কাউন্টার সহ বাংলাদেশি পর্যটকদের প্রায় সব ধরনের পরিসেবাই পাওয়া যায়।


ওই এলাকায় গেলে মনেই হবে না যে এটা ঢাকার বাইরে অন্য কোনও শহরের রাস্তা।


তবে জুলাই মাস থেকে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতে বাংলাদেশিদের আসা কমে গিয়েছিল। আর অগাস্ট থেকে তা একরকম বন্ধই হয়ে গেছে।


“এখন শুধু মাত্র মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে মানুষ আসতে পারছেন, অথবা আগে থেকে যাদের ভিসা নেওয়া ছিল, তারা আসছেন,” বলছিলেন মার্কুইস স্ট্রিটের হোটেল মালিকদের সংগঠনের নেতা মনোতোষ সরকার।


“কয়েক মাস আগেও আমাদের হোটেলগুলির ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ অকুপেন্সি রেট ছিল। এখন সেটা নেমে এসেছে মাত্র ৩০ শতাংশে,” জানাচ্ছিলেন মি. সরকার।রুম অকুপেন্সি রেট হল হোটেল ব্যবসার একটি শব্দ, যা হোটেলের মোট ঘরের সংখ্যার কত শতাংশে মানুষ থাকছেন, তার হিসাব।


অর্থাৎ হোটেলগুলিতে ১০০টি ঘর থাকলে এখন মাত্র ৩০টি ঘরে পর্যটক থাকছেন।


মি. সরকার বলছিলেন, “মার্কুইস স্ট্রিটে তো শুধু হোটেল নয়, বাংলাদেশি পর্যটকদের আরও বহু পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থা আছে। তাদেরও মূল ক্রেতা ওদেশের পর্যটকরাই। তারা এখন এতটাই কম সংখ্যায় আসছেন, যে সব ব্যবসায়ীরাই মার খাচ্ছে। বাস আসছে বাংলাদেশি পর্যটক নিয়ে, কিন্তু সেখানেও দেখা যাচ্ছে ওই ৩০ শতাংশ মতোই আসন ভর্তি হচ্ছে, বাকিটা ফাঁকা থাকছে।“কতদিন এই অবস্থা চলবে, তা অনিশ্চিত। তাই অন্য কোনও অঞ্চলের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা যায় কী না, সে ব্যাপারে ভাবনা চিন্তা শুরু করছেন মার্কুইস স্ট্রিটের হোটেল ব্যবসায়ীরা।

Post a Comment

0 Comments