6/recent/ticker-posts

চট্টগ্রামে মিলছে না আগুনে পোড়া রোগীর উন্নত চিকিৎসা

 চট্রগ্রামে মিলছে না আগুনে পোড়া রোগীর উন্নত চিকিৎসা

নেই আইসিইউ ও জনবলের সেটআপ




আগুনে পোড়া রোগীর চিকিৎসা ঢাকার বাইরে মিলছে না। চট্টগ্রাম মেডিক্যালে আগুনে পোড়া রোগীর পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় আক্রান্তদের চিকিৎসা নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। হাসপাতালের ২৬ শয্যার ইউনিটে পোড়া রোগীর চিকিৎসা সেটআপ নেই। নেই আইসিইউ সুবিধা। রোগীর ব্যান্ডেজ করা ও খোলা ছাড়া জটিল রোগীদের চিকিৎসা মিলছে না। এতে শরীরে ৩০ শতাংশের আগুনে পোড়া রোগীদের ঢাকায় বার্ন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে আর্থিক সামর্থ্যবান রোগীদের ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা নিতে পারলেও বিপাকে পড়েছে দরিদ্র রোগীরা। কারণ চমেক হাসপাতালই একমাত্র তাদের ভরসা।দেশের বেশির ভাগ ভারী শিল্প চট্টগ্রামে। এখানে জাহাজভাঙা, পোশাক কারখানা ও কেমিক্যাল ডিপো রয়েছে। আছে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর। এ অবস্থায় মাঝেমধ্যেই জেলায় অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। বাড়ছে দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ও প্রাণহানি। ২০২২ সালের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের কেশবপুরে বিএম ডিপোয় আগুন থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত হন ৫০ জন। গত বছর একই উপজেলার কদমরসুল এলাকায় কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ছয় জন নিহত হন।


অগ্নিকাণ্ডে বিভিন্ন শিল্পকারখানায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। প্রতি বছরই আগুনে পোড়া অসংখ্য রোগী মারা যাচ্ছে। দূরত্বের কারণে আহত রোগীদের চমেক হাসপাতালে আনার আগেই অনেকেই মারা যাচ্ছে। শিল্প এলাকাগুলোর আশপাশের কোনো সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল নেই। গত শনিবার সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙার কারখানায় বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে ১২ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের প্রথমে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু এখানে আইসিইউ বা এইচডিইউর কোনো চিকিৎসা সুবিধা নেই। আহতদের মধ্যে আক্রান্ত গুরুতর হওয়ায় সাত জনকে ঢাকায় বার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মধ্যে আহত এক জন গতকাল মারা গেছে। চিকিৎসা সুবিধা পর্যাপ্ত না থাকায় আক্রান্ত রোগীদের সীতাকুণ্ড থেকে চমেক হাসপাতাল পরবর্তীকালে আবার ঢাকায় নিয়ে যাওয়ায় চিকিৎসা বিলম্বের কারণে আহতদের অবস্থা আরও জটিল হয়ে পড়েছে।


চমেক হাসপাতালের ২৬ শয্যার বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ওয়ার্ডে প্রতিদিন দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকে। আগুনে পোড়া রোগীদের ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানান, আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ ও এইচডিইউ জরুরি। শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আইসিইউ বেশি প্রয়োজন হয়। কিন্তু চমেক হাসপাতালের এই ওয়ার্ডে আইসিইউ সুবিধা নেই। নেই অপারেশন থিয়েটার। ফলে আহত পোড়া রোগীদের অন্যান্য রোগীর মতো চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। চিকিৎসাধীন পোড়া রোগীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।


চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একটি বার্ন ইউনিট করতে ২০১৬ সালে চীনকে অনুরোধ জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে সমীক্ষা চালায় দেশটি। পরে চীন সরকার প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন করে।চীন সরকারের সঙ্গে ২০২৩ সালের মার্চে প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তি হয়। চীন সরকার এ প্রকল্পে ৬৩ শতাংশ অর্থ অনুদান হিসেবে দিচ্ছে, তাই তাদের নির্বাচিত ঠিকাদারই অবকাঠামো নির্মাণ করবে। অবকাঠামো নির্মাণের যন্ত্রপাতি, প্রকৌশলী ও উপকরণ সরবরাহ করবে দেশটি।প্রকল্পের সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বার্ন ইউনিটের সাইটের ছবি চেয়েছেন। আমরা ছবি পাঠিয়েছি। আর কোনো অগ্রগতি বিষয়ে জানা নেই।’

Post a Comment

0 Comments